ঢাকা ০৭:৪৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo স্কয়ার ফার্মারর বিরুদ্ধে ডোজ প্রতারণা ও রিপ্যাকিংয়ের অভিযোগে প্রেস কনফারেন্স শনিবার Logo ৫৭ বছরেও শেবাচিমে চালু হয়নি নিউরো ওয়ার্ড, স্ট্রোকের রোগীদের চরম ভোগান্তি Logo সৈয়দপুরে আর্মি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক হিসাববিজ্ঞান দিবস পালিত Logo তানোরে নতুন ধানের জাত ব্রি ধান ১০৩ এর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত Logo প্রিপেইড মিটার স্থাপন বন্ধ ও মামলা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে মৌন মিছিল ও স্মারকলিপি হস্তান্তর Logo সৈয়দপুরে গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার Logo শ্রীমঙ্গলে সাংবাদিকদের সাথে সংসদ সদস্য প্রার্থী হারুনুর রশিদের মতবিনিময় সভা Logo মোবাইল-ই কাল হলো নবম শ্রেণীর ছাত্রী জ্যামির, শিক্ষকের শাসন -অতঃপর বিষপানের মৃত্যু Logo রাজধানীর বাড্ডা ও শাহজাদপুরে ২ বাসে আগুন Logo রাজধানীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে একজন নিহত

বাবা-মেয়েকে অপহরণ করে নির্যাতনের দায়ে চাচা-ভাতিজা কারাগারে

চাঁপাইনবাবগঞ্জের চৌডালায় বাবা ও ৬ বছরের মেয়েকে অপহরণ করে নির্যাতনের দায়ে অপহরণকৃত যুবকের আপন ভাই ও চাচাকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত৷ বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের গোমস্তাপুর আমলী আদালতের বিচারক সারমিন খাতুন তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

গ্রেফতারকৃত দুই ব্যক্তি চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার চৌডালা ইউনিয়নের বসনীটোলা গ্রামের মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে মো. ফয়েজ রহমান (৫০) ও একই গ্রামের মৃত হাজী দানেস উদ্দিনের ছেলে মো. নেফাউর রহমান (৬০)। তারা সম্পর্কে আপন চাচা-ভাতিজা।

মামলার প্রধান আসামী ফয়েজ রহমানের আপন ছোট ভাই মো. ফয়সাল রহমান সোহেল (৪০) ও ভাতিজি মোসা. ফামিয়া খাতুনকে (০৬) অপহরণ করে নির্যাতনের মামলায় তাদেরকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। মামলার বাদি অপহরনের শিকার ফয়সাল রহমান সোহেলের সাবেক স্ত্রী সায়লা সারমিন শোভা। গত ২৮ আগষ্ট গোমস্তাপুর থানায় তাদের দুজনকে আসামী করে মেয়ে ও সাবেক স্বামী অপহরণ ও নির্যাতনের মামলা করেন তিনি৷

মামলার নথি, বাদি, আইনজীবী, অপহরনের শিকার ভুক্তভোগী ও আদালত সূত্রে জানা যায়, গতবছরের ১৯ আগষ্ট রাতে একটি কালো রংয়ের মাইক্রোবাসে করে কয়েকজন লোক বসনীটোলা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে ফয়সাল রহমান সোহেলকে তুলে নিয়ে যায়। পরদিন সকালে ০৬ বছরের শিশু ফামিয়া খাতুনকে তার নানারবাড়ি থেকে স্কুলে প্রোগ্রামে তার বাবা নিয়ে যেতে বলেছে জানিয়ে সেখান থেকে তাকে নিয়ে আসেন নেফাউর রহমান৷ ঘটনার চারদিন নিখোঁজ ছিল বাবা ফয়সাল রহমান সোহেল ও তার মেয়ে ফামিয়া।

এনিয়ে পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুজি শুরু করলেও বাবা-মেয়ের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। এরপর ২৩ আগষ্ট ফয়সাল রহমান সোহেলের ছোট চাচা পারভেজ স্থানীয় মসজিদে জুমার নামাজ শেষে বাবা-মেয়ের নিখোঁজের বিষয়টি মুসল্লীদের অবহিত করেন। এর প্রেক্ষিতে মসজিদেই ফয়সাল রহমান সোহেলের আরেক চাচা নেফাউর রহমান জানান, তার কিছুই হয়নি, সে ভালো আছে, বর্তমানে রিহ্যাব সেন্টারে আছে। কিন্তু এরপরে পরিবার ফয়সাল রহমান সোহেলের পরিবার তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কোন সন্ধান পায়নি।

মামলার বাদি সায়লা সারমিন শোভা জানান, সাবেক স্বামী ও ০৬ বছরের মেয়েকে অপহরণ করে নির্যাতন করেছিল ফয়েজ রহমান ও নেফাউর রহমান। তাদের উদ্দেশ্য ছিল, বাবা-মেয়েকে অপহরণ নির্যাতন করে ফয়সাল রহমান সোহেলের সকল সম্পত্তি দখল করা। কোন সন্ধান না পেয়ে বাধ্য হয়েই থানায় মামলা করেছিলাম। আশা করি, আদালতের মাধ্যমে আমি ন্যায়বিচার পাব৷

অপহরণের শিকার ফয়সাল রহমান সোহেল বলেন, আমার সম্পত্তি দখল করতেই আপন ভাই ও চাচা আমাকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে ব্যাপক নির্যাতন চালায়। শুধু আমাকে নয়, আমার ০৬ বছরের মেয়েকেও অপহরণ করে তারা। বৃহস্পতিবার বিকেলে চার্জশিটে আসামীদের ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততা পেলে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন৷ আমি বিশ্বাস করি, আমি এই অপরাধের বিচার পাব।

অপহরণ এবং নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলায় চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। বাদির আইনজীবী আব্দুল্লাহ আহমেদ নাজিব বলেন, বৃহস্পতিবার আদালত আসামীদেরকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আসামীরা চার্জশীট দাখিল পর্যন্ত জামিনে ছিল। চার্জশিটে আদালত আসামীদের ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততা রয়েছে মনে করে এই নির্দেশ প্রদান করেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

স্কয়ার ফার্মারর বিরুদ্ধে ডোজ প্রতারণা ও রিপ্যাকিংয়ের অভিযোগে প্রেস কনফারেন্স শনিবার

বাবা-মেয়েকে অপহরণ করে নির্যাতনের দায়ে চাচা-ভাতিজা কারাগারে

Update Time : ০৬:৫৯:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫

চাঁপাইনবাবগঞ্জের চৌডালায় বাবা ও ৬ বছরের মেয়েকে অপহরণ করে নির্যাতনের দায়ে অপহরণকৃত যুবকের আপন ভাই ও চাচাকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত৷ বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের গোমস্তাপুর আমলী আদালতের বিচারক সারমিন খাতুন তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

গ্রেফতারকৃত দুই ব্যক্তি চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার চৌডালা ইউনিয়নের বসনীটোলা গ্রামের মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে মো. ফয়েজ রহমান (৫০) ও একই গ্রামের মৃত হাজী দানেস উদ্দিনের ছেলে মো. নেফাউর রহমান (৬০)। তারা সম্পর্কে আপন চাচা-ভাতিজা।

মামলার প্রধান আসামী ফয়েজ রহমানের আপন ছোট ভাই মো. ফয়সাল রহমান সোহেল (৪০) ও ভাতিজি মোসা. ফামিয়া খাতুনকে (০৬) অপহরণ করে নির্যাতনের মামলায় তাদেরকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। মামলার বাদি অপহরনের শিকার ফয়সাল রহমান সোহেলের সাবেক স্ত্রী সায়লা সারমিন শোভা। গত ২৮ আগষ্ট গোমস্তাপুর থানায় তাদের দুজনকে আসামী করে মেয়ে ও সাবেক স্বামী অপহরণ ও নির্যাতনের মামলা করেন তিনি৷

মামলার নথি, বাদি, আইনজীবী, অপহরনের শিকার ভুক্তভোগী ও আদালত সূত্রে জানা যায়, গতবছরের ১৯ আগষ্ট রাতে একটি কালো রংয়ের মাইক্রোবাসে করে কয়েকজন লোক বসনীটোলা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে ফয়সাল রহমান সোহেলকে তুলে নিয়ে যায়। পরদিন সকালে ০৬ বছরের শিশু ফামিয়া খাতুনকে তার নানারবাড়ি থেকে স্কুলে প্রোগ্রামে তার বাবা নিয়ে যেতে বলেছে জানিয়ে সেখান থেকে তাকে নিয়ে আসেন নেফাউর রহমান৷ ঘটনার চারদিন নিখোঁজ ছিল বাবা ফয়সাল রহমান সোহেল ও তার মেয়ে ফামিয়া।

এনিয়ে পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুজি শুরু করলেও বাবা-মেয়ের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। এরপর ২৩ আগষ্ট ফয়সাল রহমান সোহেলের ছোট চাচা পারভেজ স্থানীয় মসজিদে জুমার নামাজ শেষে বাবা-মেয়ের নিখোঁজের বিষয়টি মুসল্লীদের অবহিত করেন। এর প্রেক্ষিতে মসজিদেই ফয়সাল রহমান সোহেলের আরেক চাচা নেফাউর রহমান জানান, তার কিছুই হয়নি, সে ভালো আছে, বর্তমানে রিহ্যাব সেন্টারে আছে। কিন্তু এরপরে পরিবার ফয়সাল রহমান সোহেলের পরিবার তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কোন সন্ধান পায়নি।

মামলার বাদি সায়লা সারমিন শোভা জানান, সাবেক স্বামী ও ০৬ বছরের মেয়েকে অপহরণ করে নির্যাতন করেছিল ফয়েজ রহমান ও নেফাউর রহমান। তাদের উদ্দেশ্য ছিল, বাবা-মেয়েকে অপহরণ নির্যাতন করে ফয়সাল রহমান সোহেলের সকল সম্পত্তি দখল করা। কোন সন্ধান না পেয়ে বাধ্য হয়েই থানায় মামলা করেছিলাম। আশা করি, আদালতের মাধ্যমে আমি ন্যায়বিচার পাব৷

অপহরণের শিকার ফয়সাল রহমান সোহেল বলেন, আমার সম্পত্তি দখল করতেই আপন ভাই ও চাচা আমাকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে ব্যাপক নির্যাতন চালায়। শুধু আমাকে নয়, আমার ০৬ বছরের মেয়েকেও অপহরণ করে তারা। বৃহস্পতিবার বিকেলে চার্জশিটে আসামীদের ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততা পেলে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন৷ আমি বিশ্বাস করি, আমি এই অপরাধের বিচার পাব।

অপহরণ এবং নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলায় চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। বাদির আইনজীবী আব্দুল্লাহ আহমেদ নাজিব বলেন, বৃহস্পতিবার আদালত আসামীদেরকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আসামীরা চার্জশীট দাখিল পর্যন্ত জামিনে ছিল। চার্জশিটে আদালত আসামীদের ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততা রয়েছে মনে করে এই নির্দেশ প্রদান করেন।