ঢাকা ০৭:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo স্কয়ার ফার্মারর বিরুদ্ধে ডোজ প্রতারণা ও রিপ্যাকিংয়ের অভিযোগে প্রেস কনফারেন্স শনিবার Logo ৫৭ বছরেও শেবাচিমে চালু হয়নি নিউরো ওয়ার্ড, স্ট্রোকের রোগীদের চরম ভোগান্তি Logo সৈয়দপুরে আর্মি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক হিসাববিজ্ঞান দিবস পালিত Logo তানোরে নতুন ধানের জাত ব্রি ধান ১০৩ এর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত Logo প্রিপেইড মিটার স্থাপন বন্ধ ও মামলা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে মৌন মিছিল ও স্মারকলিপি হস্তান্তর Logo সৈয়দপুরে গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার Logo শ্রীমঙ্গলে সাংবাদিকদের সাথে সংসদ সদস্য প্রার্থী হারুনুর রশিদের মতবিনিময় সভা Logo মোবাইল-ই কাল হলো নবম শ্রেণীর ছাত্রী জ্যামির, শিক্ষকের শাসন -অতঃপর বিষপানের মৃত্যু Logo রাজধানীর বাড্ডা ও শাহজাদপুরে ২ বাসে আগুন Logo রাজধানীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে একজন নিহত
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত ১৬৬ সুপারিশ

সংস্কার প্রস্তাবে ত্রিমুখী অবস্থানে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

ঢাকা : জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত ১৬৬টি সংস্কার সুপারিশে ভিন্নমুখী মতামত দিয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, প্রশাসন ও বিচার বিভাগসহ ছয়টি বিষয়ে গঠিত কমিশনের সুপারিশে তিনটি দলের অবস্থানে এসেছে স্পষ্ট পার্থক্য। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্ষমতা ও মেয়াদ নিয়েও রয়েছে মতবিরোধ।

বিএনপির ভিন্নমত স্পষ্ট
বিএনপি ঐকমত্য কমিশনের অনেক সুপারিশে দ্বিমত জানিয়েছে। বিশেষ করে, ১৯৭১ ও ২০২৪ সালকে একই স্তরে তুলনার প্রস্তাব এবং রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে দলটি একমত নয়। তবে বিচার বিভাগের বেশিরভাগ সংস্কার প্রস্তাবে বিএনপি সম্মতি জানিয়েছে।

দলটির মত অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বাড়িয়ে ডিলিমিটেশনের অধিকার অধ্যাদেশের মাধ্যমে ইসির হাতে দেওয়া যেতে পারে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংক্রান্ত ২০টি প্রস্তাবের মধ্যে ১১টিতে সরাসরি একমত, কয়েকটিতে নীতিগত একমত এবং একটি প্রস্তাবে ভিন্নমত জানিয়েছে দলটি। প্রশাসন সংস্কারের ২৬টি প্রস্তাবের প্রায় অর্ধেকের সঙ্গে একমত এবং বাকি অর্ধেকে মতামত দিয়েছে।

নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে কমিশনের ২৭টি প্রস্তাবের অধিকাংশই সংবিধান সংশোধনের আওতাভুক্ত বলে মনে করছে বিএনপি। তাই এসব বিষয়ে কমিশনের পরিবর্তে সংবিধান সংস্কার কমিশনের মাধ্যমেই আলোচনা হওয়া উচিত বলে দলটির দাবি।

সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির পক্ষে জামায়াত
জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সংবিধানের মূলনীতিতে ‘আল্লাহর প্রতি অবিচল বিশ্বাস ও আস্থা’ ফিরিয়ে আনার দাবি জানানো হয়েছে। দলটি সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় এবং নির্বাচন কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে চায়।

দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের ধারণা মেনে নিলেও পুরোপুরি একমত নয় জামায়াত। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে আস্থাভোট ও বাজেট পাসে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার পক্ষে মত দিয়েছে তারা। তবে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণপরিষদ নির্বাচন চায় না দলটি।

গণপরিষদের দাবি এনসিপির
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ঐকমত্য কমিশনের ১৬৬টি সুপারিশের মধ্যে ১১৩টিতে একমত, ২৯টিতে আংশিক একমত এবং ২২টিতে দ্বিমত জানিয়েছে। দলটি আসন্ন নির্বাচনকে একটি ‘গণপরিষদ নির্বাচন’ হিসেবে আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে, যার মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার সম্ভব হবে।

তরুণদের রাজনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করতে প্রার্থী মনোনয়নে ১০ শতাংশ কোটা এবং সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর রাখার প্রস্তাব দিয়েছে এনসিপি। ডেপুটি স্পিকার বিরোধী দল থেকে নির্বাচিত হওয়ার দাবিও তুলেছে দলটি।

দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠনের ক্ষেত্রে এনসিপি একমত এবং চায় উচ্চকক্ষের প্রার্থী তালিকা আগেই প্রকাশ করা হোক। নির্বাচনকালীন সরকারের মেয়াদ ৭০–৭৫ দিন এবং কাজ হবে কেবল নির্বাচন আয়োজন—এমন ব্যবস্থার পক্ষে তারা।

এনসিসি থাকলে আলাদা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন নেই বলে মনে করে এনসিপি। বিচার বিভাগের জন্য আর্থিক স্বাধীনতা ও নিজস্ব সচিবালয় প্রতিষ্ঠার দাবিও জানিয়েছে দলটি।

দৈনিক বার্তা /০৯ এপ্রির ২০২৫/ জেডআরসি

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

স্কয়ার ফার্মারর বিরুদ্ধে ডোজ প্রতারণা ও রিপ্যাকিংয়ের অভিযোগে প্রেস কনফারেন্স শনিবার

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত ১৬৬ সুপারিশ

সংস্কার প্রস্তাবে ত্রিমুখী অবস্থানে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

Update Time : ০৪:২২:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫

ঢাকা : জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত ১৬৬টি সংস্কার সুপারিশে ভিন্নমুখী মতামত দিয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, প্রশাসন ও বিচার বিভাগসহ ছয়টি বিষয়ে গঠিত কমিশনের সুপারিশে তিনটি দলের অবস্থানে এসেছে স্পষ্ট পার্থক্য। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্ষমতা ও মেয়াদ নিয়েও রয়েছে মতবিরোধ।

বিএনপির ভিন্নমত স্পষ্ট
বিএনপি ঐকমত্য কমিশনের অনেক সুপারিশে দ্বিমত জানিয়েছে। বিশেষ করে, ১৯৭১ ও ২০২৪ সালকে একই স্তরে তুলনার প্রস্তাব এবং রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে দলটি একমত নয়। তবে বিচার বিভাগের বেশিরভাগ সংস্কার প্রস্তাবে বিএনপি সম্মতি জানিয়েছে।

দলটির মত অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বাড়িয়ে ডিলিমিটেশনের অধিকার অধ্যাদেশের মাধ্যমে ইসির হাতে দেওয়া যেতে পারে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংক্রান্ত ২০টি প্রস্তাবের মধ্যে ১১টিতে সরাসরি একমত, কয়েকটিতে নীতিগত একমত এবং একটি প্রস্তাবে ভিন্নমত জানিয়েছে দলটি। প্রশাসন সংস্কারের ২৬টি প্রস্তাবের প্রায় অর্ধেকের সঙ্গে একমত এবং বাকি অর্ধেকে মতামত দিয়েছে।

নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে কমিশনের ২৭টি প্রস্তাবের অধিকাংশই সংবিধান সংশোধনের আওতাভুক্ত বলে মনে করছে বিএনপি। তাই এসব বিষয়ে কমিশনের পরিবর্তে সংবিধান সংস্কার কমিশনের মাধ্যমেই আলোচনা হওয়া উচিত বলে দলটির দাবি।

সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির পক্ষে জামায়াত
জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সংবিধানের মূলনীতিতে ‘আল্লাহর প্রতি অবিচল বিশ্বাস ও আস্থা’ ফিরিয়ে আনার দাবি জানানো হয়েছে। দলটি সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় এবং নির্বাচন কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে চায়।

দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের ধারণা মেনে নিলেও পুরোপুরি একমত নয় জামায়াত। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে আস্থাভোট ও বাজেট পাসে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার পক্ষে মত দিয়েছে তারা। তবে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণপরিষদ নির্বাচন চায় না দলটি।

গণপরিষদের দাবি এনসিপির
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ঐকমত্য কমিশনের ১৬৬টি সুপারিশের মধ্যে ১১৩টিতে একমত, ২৯টিতে আংশিক একমত এবং ২২টিতে দ্বিমত জানিয়েছে। দলটি আসন্ন নির্বাচনকে একটি ‘গণপরিষদ নির্বাচন’ হিসেবে আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে, যার মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার সম্ভব হবে।

তরুণদের রাজনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করতে প্রার্থী মনোনয়নে ১০ শতাংশ কোটা এবং সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর রাখার প্রস্তাব দিয়েছে এনসিপি। ডেপুটি স্পিকার বিরোধী দল থেকে নির্বাচিত হওয়ার দাবিও তুলেছে দলটি।

দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠনের ক্ষেত্রে এনসিপি একমত এবং চায় উচ্চকক্ষের প্রার্থী তালিকা আগেই প্রকাশ করা হোক। নির্বাচনকালীন সরকারের মেয়াদ ৭০–৭৫ দিন এবং কাজ হবে কেবল নির্বাচন আয়োজন—এমন ব্যবস্থার পক্ষে তারা।

এনসিসি থাকলে আলাদা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন নেই বলে মনে করে এনসিপি। বিচার বিভাগের জন্য আর্থিক স্বাধীনতা ও নিজস্ব সচিবালয় প্রতিষ্ঠার দাবিও জানিয়েছে দলটি।

দৈনিক বার্তা /০৯ এপ্রির ২০২৫/ জেডআরসি