ঢাকা ১০:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo সৈয়দপুরে আর্মি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক হিসাববিজ্ঞান দিবস পালিত Logo তানোরে নতুন ধানের জাত ব্রি ধান ১০৩ এর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত Logo প্রিপেইড মিটার স্থাপন বন্ধ ও মামলা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে মৌন মিছিল ও স্মারকলিপি হস্তান্তর Logo সৈয়দপুরে গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার Logo শ্রীমঙ্গলে সাংবাদিকদের সাথে সংসদ সদস্য প্রার্থী হারুনুর রশিদের মতবিনিময় সভা Logo মোবাইল-ই কাল হলো নবম শ্রেণীর ছাত্রী জ্যামির, শিক্ষকের শাসন -অতঃপর বিষপানের মৃত্যু Logo রাজধানীর বাড্ডা ও শাহজাদপুরে ২ বাসে আগুন Logo রাজধানীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে একজন নিহত Logo চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ সার ব্যবসায়ীকে ১ মাসের কারাদণ্ড ও জরিমানা Logo মহাদেবপুরে আদালতের আদেশ অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা

চাঁপাইনবাবগঞ্জে সড়কের কাজ শেষ হতে না হতেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার এলজিইডি’র রাস্তার কার্পেটিং কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। হাত দিয়ে টান দিলেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং।

স্থানীয়দের অভিযোগ, রাস্তার কার্পেটিং কাজ তদারকিতে উপজেলা এলজিইডির কর্মকর্তাদের গাফিলতি ও স্বজনপ্রীতি থাকায় কাজে চরম অনিয়ম হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, দলদলী ইউনিয়নের ভোলাহাট-রহনপুর মূল সড়ক থেকে খরকপুর গ্রামের মাজেদার বাড়ি পর্যন্ত ৪২০ মিটার রাস্তার কার্পেটিং প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্পটি টিপু সুলতানের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হচ্ছে। তবে কাজের কোনো বিবরণী বোর্ড দেখা যায়নি। প্রকল্পের তথ্য জানতে চাইলে দায়িত্বরত উপসহকারী প্রকৌশলী তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করতে বলেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, যেসব অংশে কাজ শেষ হয়েছে সেসব স্থানে হাত দিয়ে টান দিলেই কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। কার্পেটিং কাজ শেষ হতে না হতেই পুরো রাস্তা ভেঙে খানা-খন্দ তৈরি ও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। কতটা দুর্নীতি ও অনিয়ম হলে রাস্তাটি এমন পরিণত হয়। রাস্তাটি সংস্কারে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে কাজ করা হয়েছে, তাই হাতের টানেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং।

শাজাহান আলী নামে একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, এই রাস্তার কাজে শুরু থেকেই ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি হয়ে আসছে। রাস্তার কার্পেটিংয়ে নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহার করা হচ্ছে। যে কারণে হাত দিলেই কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে।

মো. আব্দুর জাব্বার বলেন, রাস্তাটি দীর্ঘ দিন থেকে ভাঙা ছিল। নতুন করে নিম্নমানের ইট খোয়া দিয়ে কার্পেটিং করছে। পর্যাপ্ত বালি ও পানি দেইনি। রাতের আঁধারে হালকা করে কালো মবেল ছিটিয়ে সকাল থেকে কার্পেটিং করা শুরু করে। এলাকাবাসীর বাধা উপেক্ষা করে ঠিকাদার কাজ অব্যাহত রেখেছে।

সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের মো. লোকমান আলী বলেন, রাস্তাটি কাজ হচ্ছে নিম্নমানের। তিন নাম্বার ইট দিয়েছে, পানি বালি কিছু নাই। সাইডের ইটগুলো উঠে যাচ্ছে। রোলার দিয়ে ভালোভাবে ডলা হয়নি। এলাকাবাসী তাদের বলাতে আইনের হুমকি দেয়। কোনো সিডিউল বোর্ড নাই। আমরা চাই মানসম্মত কাজ হোক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলজিইডি অফিসের একজন বলেন, ডব্লিউ বিএম পানি দিয়ে ভালোভাবে সমান করে তেল দেওয়ার পরে কার্পেটিং করতে হতো। এগুলো ভালোভাবে না করার জন্য কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে।

রাস্তায় দায়িত্বরত ভোলাহাট উপজেলা এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী সুজন রেজা বলেন, এটা ছোট কাজ হওয়ায় কাজের বিবরণী বোর্ড টাঙানোর কোনো নির্দেশনা নাই। কাজ সুষ্ঠুভাবে হওয়ার পরও এলাকাবাসী বাধা দিলে পুলিশ ডাকার কথা বলি।

এ ব্যাপারে ঠিকাদার টিপু সুলতান বলেন, আমি অসুস্থ থাকায় কাজের কাছে যেতে পারিনি। অফিস স্টিমেটের বাইরে কাজ করিয়ে নিচ্ছে। এখানে আমার আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা লস হবে। তারপরও এলাকার লোকজন কাজে বাধা দিচ্ছে।

ভোলাহাট উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. আহারাম আলীর সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও ফোন রিসিভ করেনি। পরে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও কোনো উত্তর মেলেনি।

এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৗশলী আনোয়ার হোসন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলেই জানা যাবে কি হয়েছিল।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

সৈয়দপুরে আর্মি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক হিসাববিজ্ঞান দিবস পালিত

চাঁপাইনবাবগঞ্জে সড়কের কাজ শেষ হতে না হতেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং

Update Time : ১২:২০:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার এলজিইডি’র রাস্তার কার্পেটিং কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। হাত দিয়ে টান দিলেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং।

স্থানীয়দের অভিযোগ, রাস্তার কার্পেটিং কাজ তদারকিতে উপজেলা এলজিইডির কর্মকর্তাদের গাফিলতি ও স্বজনপ্রীতি থাকায় কাজে চরম অনিয়ম হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, দলদলী ইউনিয়নের ভোলাহাট-রহনপুর মূল সড়ক থেকে খরকপুর গ্রামের মাজেদার বাড়ি পর্যন্ত ৪২০ মিটার রাস্তার কার্পেটিং প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্পটি টিপু সুলতানের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হচ্ছে। তবে কাজের কোনো বিবরণী বোর্ড দেখা যায়নি। প্রকল্পের তথ্য জানতে চাইলে দায়িত্বরত উপসহকারী প্রকৌশলী তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করতে বলেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, যেসব অংশে কাজ শেষ হয়েছে সেসব স্থানে হাত দিয়ে টান দিলেই কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। কার্পেটিং কাজ শেষ হতে না হতেই পুরো রাস্তা ভেঙে খানা-খন্দ তৈরি ও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। কতটা দুর্নীতি ও অনিয়ম হলে রাস্তাটি এমন পরিণত হয়। রাস্তাটি সংস্কারে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে কাজ করা হয়েছে, তাই হাতের টানেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং।

শাজাহান আলী নামে একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, এই রাস্তার কাজে শুরু থেকেই ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি হয়ে আসছে। রাস্তার কার্পেটিংয়ে নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহার করা হচ্ছে। যে কারণে হাত দিলেই কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে।

মো. আব্দুর জাব্বার বলেন, রাস্তাটি দীর্ঘ দিন থেকে ভাঙা ছিল। নতুন করে নিম্নমানের ইট খোয়া দিয়ে কার্পেটিং করছে। পর্যাপ্ত বালি ও পানি দেইনি। রাতের আঁধারে হালকা করে কালো মবেল ছিটিয়ে সকাল থেকে কার্পেটিং করা শুরু করে। এলাকাবাসীর বাধা উপেক্ষা করে ঠিকাদার কাজ অব্যাহত রেখেছে।

সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের মো. লোকমান আলী বলেন, রাস্তাটি কাজ হচ্ছে নিম্নমানের। তিন নাম্বার ইট দিয়েছে, পানি বালি কিছু নাই। সাইডের ইটগুলো উঠে যাচ্ছে। রোলার দিয়ে ভালোভাবে ডলা হয়নি। এলাকাবাসী তাদের বলাতে আইনের হুমকি দেয়। কোনো সিডিউল বোর্ড নাই। আমরা চাই মানসম্মত কাজ হোক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলজিইডি অফিসের একজন বলেন, ডব্লিউ বিএম পানি দিয়ে ভালোভাবে সমান করে তেল দেওয়ার পরে কার্পেটিং করতে হতো। এগুলো ভালোভাবে না করার জন্য কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে।

রাস্তায় দায়িত্বরত ভোলাহাট উপজেলা এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী সুজন রেজা বলেন, এটা ছোট কাজ হওয়ায় কাজের বিবরণী বোর্ড টাঙানোর কোনো নির্দেশনা নাই। কাজ সুষ্ঠুভাবে হওয়ার পরও এলাকাবাসী বাধা দিলে পুলিশ ডাকার কথা বলি।

এ ব্যাপারে ঠিকাদার টিপু সুলতান বলেন, আমি অসুস্থ থাকায় কাজের কাছে যেতে পারিনি। অফিস স্টিমেটের বাইরে কাজ করিয়ে নিচ্ছে। এখানে আমার আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা লস হবে। তারপরও এলাকার লোকজন কাজে বাধা দিচ্ছে।

ভোলাহাট উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. আহারাম আলীর সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও ফোন রিসিভ করেনি। পরে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও কোনো উত্তর মেলেনি।

এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৗশলী আনোয়ার হোসন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলেই জানা যাবে কি হয়েছিল।