ঢাকা ০৫:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ সার ব্যবসায়ীকে ১ মাসের কারাদণ্ড ও জরিমানা Logo মহাদেবপুরে আদালতের আদেশ অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা Logo দুর্গাপুরে ‎রাজশাহী-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন  Logo শীতের গন্ধ, তাপমাত্রা কমছে প্রতিদিন দুই ডিগ্রি ঈশ্বরদীতে দোকানে উঠছে শীতের সোয়েটার-জ্যাকেট, কম্বল Logo পদ্মার চরজুড়ে চলছে ‘অপারেশন ফার্স্ট লাইট’ Logo নীলফামারীতে চার দফা দাবী বাস্তবায়নে বিসিএস প্রভাষক পরিষদের মানবন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন Logo বিএনপি অফিস ভাংচুর মামলায়  ছাত্রলীগ নেতা আটক   Logo দেশের চলমান সব সংকট নাটকের অংশ, মানুষ ভোট দিতে চায়: মির্জা ফখরুল Logo ধেয়ে আসছে মৌসুমের প্রথম কুয়াশা বেল্ট Logo ১৩ নভেম্বর রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইসির সংলাপ শুরু

ঈদ সামনে রেখে মাছ-মুরগির দাম উর্ধ্বমুখী

ঢাকা : দেখতে দেখতে শেষ দশকে চলে এসেছে পবিত্র রমজান মাস। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর আসছে ঈদুল ফিতর। সাম্য-মৈত্রী-শান্তি আর মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের সওগাত নিয়ে প্রতি বছর আমাদের মাঝে উপস্থিত হয় এ খুশির ঈদ। সে সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মুনাফার আশায় বিভিন্ন দ্রব্য ও পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়।

এবারের রমজানে কাঁচা বাজার ও রেজার অতি প্রয়োজনীয় পন্য ছোলা, খেজুর চিনির দাম আগেরবারের তুলনায় অনেকটাই কম ছিল। তবে বেগুন, শসা ও লেবুর দাম ছিল লাগামহীন। অবশ্য কয়েক দিনের মধ্যেই সেটি কমে এসেছিল। কমেছিল মাছ-মুরগীর দামও। কিন্তু ঈদকে টার্গেট করে আবারও কিছু কিছু জিনিসের দাম বৃদ্ধির তৎপরতা শুরু করেছে অতি মুনাফাখোররা।

ঈদ সামনে রেখে এরমধ্যেই বাড়তে শুরু করেছে সব ধরনের মুরগির দাম। পাশাপাশি এখও উর্ধ্বমুখী রয়েছে চালের দাম। মিনিকেট চালের দাম কেজিতে ৫ থেকে ৮ টাকা বেড়েছে। তবে স্থিতিশীল রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার (২১ মার্চ) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

ক্রেতারা বলছেন, ঈদ সামনে রেখে বিভিন্ন পণ্যের দাম বৃদ্ধির পায়তারা করছে ব্যবসায়ীরা। এতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের ব্যায় সামলানো কঠিন হয়ে পড়ছে। অপরদিকে বিক্রেতারা বলছেন, প্রতিবছরই ঈদের আগে দাম বাড়ে মুরগির। ঈদুল ফিতরের আগে মুরগির দাম কিছুটা বাড়ে। এ জন্য পাইকারি বাজারে কম পরিমাণে মুরগি ছাড়ছেন খামারিরা। আর চাহিদার তুলনায় মুরগি কম আসায় দাম বেড়েছে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২১০-২২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এর আগে ১৯০-২০০ টাকা কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছিল। একইভাবে পাকিস্তানি সোনালী মুরগির দাম বেড়ে কেজি ৩০০-৩২০ টাকা হয়েছে। এ ছাড়া দেশি মুরগি ৬৫০-৬৮০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৮০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকায়।

সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে ডিমের দামও। এক ডজন ডিম পাওয়া যাচ্ছে ১২০-১৩০ টাকায়। পাশাপাশি মুদি বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম অপরিবর্তিত দেখা গেছে।

এদিকে মুরগির দাম বাড়লেও বাজারে স্থিতিশীল রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০-৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি খাসির মাংস ১ হাজার ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কমলাপুর বাজারের ক্রেতা আল আমিন বলেন, প্রতি শুক্রবার মুরগি কিনি। কিন্তু ব্রয়লার মুরগির দাম যেভাবে বাড়ছে, তাতে আমাদের মতো গরিব মানুষ সমস্যায় পড়ে যাচ্ছে। ঈদের মধ্যে দাম আরও বাড়বে বলে মনে হচ্ছে।

এ বছর রোজার শুরুতেই বিভিন্ন সবজিপণ্যের মধ্যে লেবু, বেগুন ও শসার দাম বেড়ে যায়। পরে দাম কিছুটা কমলেও তা এখনো চড়া রয়েছে। রোজার শুরুর দিকে আকারভেদে এক হালি লেবু ৫০-৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। পরে সেই দাম কিছুটা কমে ৪০-৬০ টাকা হয়। বেগুন ও শসারও একই অবস্থা। বর্তমানে প্রতি কেজি বেগুন ৪০-৬০ টাকা ও শসা ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের চেয়ে একটু বেড়েছে।

এ ছাড়া প্রতি কেজি টমেটো ২০-২৫ টাকা ও কাঁচা মরিচ ৩০-৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আলু ও পেঁয়াজের দাম আগে থেকেই কম। বর্তমানে প্রতি কেজি আলু ২০-২৫ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা বিক্রেতারা জানান, বর্তমানে আলু ও পেঁয়াজের মৌসুম থাকায় সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। এ কারণে দাম কম।

এখনও অস্থির রয়েছে মাছের বাজার। বর্তমানে প্রতি কেজি চাষের রুই (দুই কেজি আকারের) ৩৫০-৩৮০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা, পাঙাশ ১৮০-২২০ টাকা, কই ২৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ টাকা, শিং ৪৫০ টাকা ও চিংড়ি ৬৫০-৮০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০-১২০০ টাকায়।

বাজারে এখনও চালের দাম বাড়তি। গত দুই সপ্তাহে মিনিকেট চালের দাম কেজিতে ৫ থেকে ৮ টাকা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। খুচরা দোকানে প্রতি কেজি মিনিকেট চালের দাম ৮৫ টাকা ৮৮ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে মিনিকেট চালের মজুত কম। সরবরাহ কমায় ও ধানের দাম বাড়ায় মিনিকেট চালের দামও বেড়েছে। তবে মাঝারি ও মোটা চালের দাম বাড়েনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ সার ব্যবসায়ীকে ১ মাসের কারাদণ্ড ও জরিমানা

ঈদ সামনে রেখে মাছ-মুরগির দাম উর্ধ্বমুখী

Update Time : ০২:২৬:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫

ঢাকা : দেখতে দেখতে শেষ দশকে চলে এসেছে পবিত্র রমজান মাস। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর আসছে ঈদুল ফিতর। সাম্য-মৈত্রী-শান্তি আর মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের সওগাত নিয়ে প্রতি বছর আমাদের মাঝে উপস্থিত হয় এ খুশির ঈদ। সে সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মুনাফার আশায় বিভিন্ন দ্রব্য ও পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়।

এবারের রমজানে কাঁচা বাজার ও রেজার অতি প্রয়োজনীয় পন্য ছোলা, খেজুর চিনির দাম আগেরবারের তুলনায় অনেকটাই কম ছিল। তবে বেগুন, শসা ও লেবুর দাম ছিল লাগামহীন। অবশ্য কয়েক দিনের মধ্যেই সেটি কমে এসেছিল। কমেছিল মাছ-মুরগীর দামও। কিন্তু ঈদকে টার্গেট করে আবারও কিছু কিছু জিনিসের দাম বৃদ্ধির তৎপরতা শুরু করেছে অতি মুনাফাখোররা।

ঈদ সামনে রেখে এরমধ্যেই বাড়তে শুরু করেছে সব ধরনের মুরগির দাম। পাশাপাশি এখও উর্ধ্বমুখী রয়েছে চালের দাম। মিনিকেট চালের দাম কেজিতে ৫ থেকে ৮ টাকা বেড়েছে। তবে স্থিতিশীল রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার (২১ মার্চ) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

ক্রেতারা বলছেন, ঈদ সামনে রেখে বিভিন্ন পণ্যের দাম বৃদ্ধির পায়তারা করছে ব্যবসায়ীরা। এতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের ব্যায় সামলানো কঠিন হয়ে পড়ছে। অপরদিকে বিক্রেতারা বলছেন, প্রতিবছরই ঈদের আগে দাম বাড়ে মুরগির। ঈদুল ফিতরের আগে মুরগির দাম কিছুটা বাড়ে। এ জন্য পাইকারি বাজারে কম পরিমাণে মুরগি ছাড়ছেন খামারিরা। আর চাহিদার তুলনায় মুরগি কম আসায় দাম বেড়েছে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২১০-২২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এর আগে ১৯০-২০০ টাকা কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছিল। একইভাবে পাকিস্তানি সোনালী মুরগির দাম বেড়ে কেজি ৩০০-৩২০ টাকা হয়েছে। এ ছাড়া দেশি মুরগি ৬৫০-৬৮০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৮০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকায়।

সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে ডিমের দামও। এক ডজন ডিম পাওয়া যাচ্ছে ১২০-১৩০ টাকায়। পাশাপাশি মুদি বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম অপরিবর্তিত দেখা গেছে।

এদিকে মুরগির দাম বাড়লেও বাজারে স্থিতিশীল রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০-৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি খাসির মাংস ১ হাজার ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কমলাপুর বাজারের ক্রেতা আল আমিন বলেন, প্রতি শুক্রবার মুরগি কিনি। কিন্তু ব্রয়লার মুরগির দাম যেভাবে বাড়ছে, তাতে আমাদের মতো গরিব মানুষ সমস্যায় পড়ে যাচ্ছে। ঈদের মধ্যে দাম আরও বাড়বে বলে মনে হচ্ছে।

এ বছর রোজার শুরুতেই বিভিন্ন সবজিপণ্যের মধ্যে লেবু, বেগুন ও শসার দাম বেড়ে যায়। পরে দাম কিছুটা কমলেও তা এখনো চড়া রয়েছে। রোজার শুরুর দিকে আকারভেদে এক হালি লেবু ৫০-৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। পরে সেই দাম কিছুটা কমে ৪০-৬০ টাকা হয়। বেগুন ও শসারও একই অবস্থা। বর্তমানে প্রতি কেজি বেগুন ৪০-৬০ টাকা ও শসা ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের চেয়ে একটু বেড়েছে।

এ ছাড়া প্রতি কেজি টমেটো ২০-২৫ টাকা ও কাঁচা মরিচ ৩০-৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আলু ও পেঁয়াজের দাম আগে থেকেই কম। বর্তমানে প্রতি কেজি আলু ২০-২৫ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা বিক্রেতারা জানান, বর্তমানে আলু ও পেঁয়াজের মৌসুম থাকায় সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। এ কারণে দাম কম।

এখনও অস্থির রয়েছে মাছের বাজার। বর্তমানে প্রতি কেজি চাষের রুই (দুই কেজি আকারের) ৩৫০-৩৮০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা, পাঙাশ ১৮০-২২০ টাকা, কই ২৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ টাকা, শিং ৪৫০ টাকা ও চিংড়ি ৬৫০-৮০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০-১২০০ টাকায়।

বাজারে এখনও চালের দাম বাড়তি। গত দুই সপ্তাহে মিনিকেট চালের দাম কেজিতে ৫ থেকে ৮ টাকা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। খুচরা দোকানে প্রতি কেজি মিনিকেট চালের দাম ৮৫ টাকা ৮৮ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে মিনিকেট চালের মজুত কম। সরবরাহ কমায় ও ধানের দাম বাড়ায় মিনিকেট চালের দামও বেড়েছে। তবে মাঝারি ও মোটা চালের দাম বাড়েনি।