ঢাকা ০৬:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo ১৩ নভেম্বর রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইসির সংলাপ শুরু Logo যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘতম শাটডাউন অবসানের পথ খুঁজছেন সিনেটররা Logo যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউনে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি ফ্লাইট বাতিল Logo সারাদেশে প্রাথমিকের শিক্ষকদের কর্মবিরতি, শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি Logo নাটোর-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে সড়ক অবরোধ Logo কারও দলীয় স্বার্থ বাস্তবায়ন করা এই সরকারের কাজ নয়: তারেক রহমান Logo আগামীকাল থেকে সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা Logo বিচারিক প্রক্রিয়ায় নিষিদ্ধ হবে আ,লীগ ও  জাতীয় পার্টি–নুরুল হক নুর Logo শীতের আগমনে কুয়াশার চাদরে ঢাকা  সৈয়দপুর শহর Logo পাবনা ৪ আসনে বিএনপি’র হাবিবকে সমর্থন করেও বিপক্ষে গেলেন মনোনয়ন প্রত্যাশী জাকারিয়া পিন্টু

র‌্যাব বিলুপ্ত, বিজিবি ও ডিজিএফআইকে সীমাবদ্ধ রাখার প্রস্তাব

ঢাকা : র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) বিলুপ্ত করা, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) সীমান্ত সংক্রান্ত বিষয় ছাড়া অন্য কিছুতে যুক্ত না করা এবং আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) কাজ সামরিক গোয়েন্দা তৎপরতায় সীমাবদ্ধ রাখার প্রস্তাব দিয়েছে হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি)

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে এবং অভ্যুত্থান পরবর্তী সহিংসতার বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের (ওএইচসিএইচআর) তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদনের সুপারিশ বাস্তবায়নে রোডম্যাপ প্রণয়নের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রস্তাব দেওয়া হয়।

এইচআরএফবি’র পক্ষে টিআইবি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায়। সংস্থাটির অন্যান্য প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে- মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ সংরক্ষণ ও ধ্বংস বা লুকানোর চেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া, ভুক্তভোগীকেন্দ্রিক ক্ষতিপূরণ প্রক্রিয়ার জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ নিশ্চিত করা,

সামরিক ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের ক্ষেত্রে নিয়মিত আদালতে বিচার নিশ্চিত করা, নিরপেক্ষ ও স্বাধীন প্রসিকিউশন সার্ভিস প্রতিষ্ঠা করা, বিচার বিভাগের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক বরাদ্দ ও জনবল, বিচারকদের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ রোধ করা।

মৃত্যুদণ্ডের প্রয়োগের ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়া এবং তা সম্পূর্ণ বাতিলের দিকে অগ্রসর হওয়া, গুমসংক্রান্ত জাতীয় কমিশনকে সহায়তা এবং পর্যাপ্ত সম্পদ সরবরাহ করা, আটকের সমস্ত গোপন স্থান সম্পর্কিত তথ্য প্রকাশ করা, বাংলাদেশের পুলিশ প্রবিধানগুলোকে সংশোধন করা। পুলিশ ও অন্য নিরাপত্তা বাহিনীকে ধাতব (প্রাণঘাতী) গুলি কমিয়ে দেওয়া, নির্বিচারে গণগ্রেফতার ও ভুয়া মামলার প্রবণতা বন্ধ করা,

নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য বাধ্যতামূলক আদেশ জারি এবং প্রয়োগ করা, নাগরিক সমাজসহ সরকার, বিরোধী দল এবং স্বাধীন সদস্যদের সমন্বয়ে একটি জাতীয় পুলিশ কমিশন গঠন করা যার নেতৃত্বে একটি ন্যায্য স্বচ্ছ এবং যোগ্যতাভিত্তিক নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলি এবং অপসারণ প্রক্রিয়া চালু করা।

এছাড়া একটি স্বাধীন পুলিশ কমিশনের মাধ্যমে পুলিশ, গোয়েন্দা, বিজিবি, আনসার ভিডিপি এবং সশস্ত্র বাহিনীর যেসব কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন বা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত তাদের পদ থেকে অপসারণ করা, জাতিসংঘ শান্তি মিশন বা অন্যান্য আন্তর্জাতিক মিশনে নিয়োজিত কোনো বাংলাদেশিকর্মী যেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার, মানবিক বা শরণার্থী আইন লঙ্ঘন বা যৌন হয়রানি বা অপব্যবহারের অভিযোগে অভিযুক্ত না হয় তা নিশ্চিত করার জন্য একটি কার্যকর এবং শক্তিশালী স্বাধীন মানবাধিকার স্ক্রিনিং ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রস্তাব করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ক্ষমতায় টিকে থাকতে আন্দোলনকারীদের ওপর মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগে সরাসরি নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

সংগঠনটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ, মানবাধিকার কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালীকরণ, বিচারবিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ, গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ, নির্বিচারে গ্রেফতার বা আটক বন্ধ, হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্য (নিবারণ) আইনের যথাযথ প্রয়োগ, নাগরিক অধিকার লঙ্ঘন করে এমন নিপীড়ন বা দমনমূলক আইনসমূহ সংশোধন এবং সাক্ষী সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন।

ফোরাম মনে করে, সরকারের উচিত এসব সুপারিশ বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। একইসঙ্গে, দ্রুত, নিরপেক্ষ ও স্বাধীন আইনি এবং বিচারিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে জুলাই-আগস্টের সহিংসতার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।

পাশাপাশি, এ সহিংসতায় আহতদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবাসহ পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান ও কার্যকর পুনর্বাসন নিশ্চিত করা প্রয়োজন। পাশাপাশি, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং নিরাময়ের জন্য সত্য প্রকাশ প্রক্রিয়া শুরু করা অত্যন্ত জরুরি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, এইচআরএফবির প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন ও স্টেপস টুওয়ার্ডস ডেভলপম্যান্টের নির্বাহী পরিচালক রঞ্জন কর্মকার।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

১৩ নভেম্বর রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইসির সংলাপ শুরু

র‌্যাব বিলুপ্ত, বিজিবি ও ডিজিএফআইকে সীমাবদ্ধ রাখার প্রস্তাব

Update Time : ০৪:০০:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫

ঢাকা : র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) বিলুপ্ত করা, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) সীমান্ত সংক্রান্ত বিষয় ছাড়া অন্য কিছুতে যুক্ত না করা এবং আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) কাজ সামরিক গোয়েন্দা তৎপরতায় সীমাবদ্ধ রাখার প্রস্তাব দিয়েছে হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি)

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে এবং অভ্যুত্থান পরবর্তী সহিংসতার বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের (ওএইচসিএইচআর) তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদনের সুপারিশ বাস্তবায়নে রোডম্যাপ প্রণয়নের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রস্তাব দেওয়া হয়।

এইচআরএফবি’র পক্ষে টিআইবি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায়। সংস্থাটির অন্যান্য প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে- মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ সংরক্ষণ ও ধ্বংস বা লুকানোর চেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া, ভুক্তভোগীকেন্দ্রিক ক্ষতিপূরণ প্রক্রিয়ার জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ নিশ্চিত করা,

সামরিক ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের ক্ষেত্রে নিয়মিত আদালতে বিচার নিশ্চিত করা, নিরপেক্ষ ও স্বাধীন প্রসিকিউশন সার্ভিস প্রতিষ্ঠা করা, বিচার বিভাগের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক বরাদ্দ ও জনবল, বিচারকদের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ রোধ করা।

মৃত্যুদণ্ডের প্রয়োগের ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়া এবং তা সম্পূর্ণ বাতিলের দিকে অগ্রসর হওয়া, গুমসংক্রান্ত জাতীয় কমিশনকে সহায়তা এবং পর্যাপ্ত সম্পদ সরবরাহ করা, আটকের সমস্ত গোপন স্থান সম্পর্কিত তথ্য প্রকাশ করা, বাংলাদেশের পুলিশ প্রবিধানগুলোকে সংশোধন করা। পুলিশ ও অন্য নিরাপত্তা বাহিনীকে ধাতব (প্রাণঘাতী) গুলি কমিয়ে দেওয়া, নির্বিচারে গণগ্রেফতার ও ভুয়া মামলার প্রবণতা বন্ধ করা,

নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য বাধ্যতামূলক আদেশ জারি এবং প্রয়োগ করা, নাগরিক সমাজসহ সরকার, বিরোধী দল এবং স্বাধীন সদস্যদের সমন্বয়ে একটি জাতীয় পুলিশ কমিশন গঠন করা যার নেতৃত্বে একটি ন্যায্য স্বচ্ছ এবং যোগ্যতাভিত্তিক নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলি এবং অপসারণ প্রক্রিয়া চালু করা।

এছাড়া একটি স্বাধীন পুলিশ কমিশনের মাধ্যমে পুলিশ, গোয়েন্দা, বিজিবি, আনসার ভিডিপি এবং সশস্ত্র বাহিনীর যেসব কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন বা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত তাদের পদ থেকে অপসারণ করা, জাতিসংঘ শান্তি মিশন বা অন্যান্য আন্তর্জাতিক মিশনে নিয়োজিত কোনো বাংলাদেশিকর্মী যেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার, মানবিক বা শরণার্থী আইন লঙ্ঘন বা যৌন হয়রানি বা অপব্যবহারের অভিযোগে অভিযুক্ত না হয় তা নিশ্চিত করার জন্য একটি কার্যকর এবং শক্তিশালী স্বাধীন মানবাধিকার স্ক্রিনিং ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রস্তাব করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ক্ষমতায় টিকে থাকতে আন্দোলনকারীদের ওপর মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগে সরাসরি নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

সংগঠনটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ, মানবাধিকার কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালীকরণ, বিচারবিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ, গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ, নির্বিচারে গ্রেফতার বা আটক বন্ধ, হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্য (নিবারণ) আইনের যথাযথ প্রয়োগ, নাগরিক অধিকার লঙ্ঘন করে এমন নিপীড়ন বা দমনমূলক আইনসমূহ সংশোধন এবং সাক্ষী সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন।

ফোরাম মনে করে, সরকারের উচিত এসব সুপারিশ বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। একইসঙ্গে, দ্রুত, নিরপেক্ষ ও স্বাধীন আইনি এবং বিচারিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে জুলাই-আগস্টের সহিংসতার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।

পাশাপাশি, এ সহিংসতায় আহতদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবাসহ পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান ও কার্যকর পুনর্বাসন নিশ্চিত করা প্রয়োজন। পাশাপাশি, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং নিরাময়ের জন্য সত্য প্রকাশ প্রক্রিয়া শুরু করা অত্যন্ত জরুরি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, এইচআরএফবির প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন ও স্টেপস টুওয়ার্ডস ডেভলপম্যান্টের নির্বাহী পরিচালক রঞ্জন কর্মকার।