ঢাকা ০৫:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ সার ব্যবসায়ীকে ১ মাসের কারাদণ্ড ও জরিমানা Logo মহাদেবপুরে আদালতের আদেশ অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা Logo দুর্গাপুরে ‎রাজশাহী-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন  Logo শীতের গন্ধ, তাপমাত্রা কমছে প্রতিদিন দুই ডিগ্রি ঈশ্বরদীতে দোকানে উঠছে শীতের সোয়েটার-জ্যাকেট, কম্বল Logo পদ্মার চরজুড়ে চলছে ‘অপারেশন ফার্স্ট লাইট’ Logo নীলফামারীতে চার দফা দাবী বাস্তবায়নে বিসিএস প্রভাষক পরিষদের মানবন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন Logo বিএনপি অফিস ভাংচুর মামলায়  ছাত্রলীগ নেতা আটক   Logo দেশের চলমান সব সংকট নাটকের অংশ, মানুষ ভোট দিতে চায়: মির্জা ফখরুল Logo ধেয়ে আসছে মৌসুমের প্রথম কুয়াশা বেল্ট Logo ১৩ নভেম্বর রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইসির সংলাপ শুরু
কম খরচে লাভ বেশি,

সূর্যমুখী চাষে কৃষকের সাফল্য দেখতে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়

হলুদ রঙের ফুলে মৌমাছির গুঞ্জন আর মন মাতানো ঘ্রাণ মুখরিত হয়ে উঠেছে পদ্মা নদীর চরে আবাদকৃত সূর্যমুখী ফুলের জমিতে। উঁচু করে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে সারি সারি সূর্যমুখী ফুল। বাতাসে দুলতে থাকা ফুলগুলো যেন আমন্ত্রণ জানাচ্ছে সৌন্দর্য উপভোগ করতে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় বাংলাদেশের চর এলাকায় আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের মাধ্যমে সূর্যমুখীর চাষবাদ হচ্ছে। প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় কৃষকদের প্রয়োজনীয় বীজ,সার ও কীটনাশক দেয়ার পাশাপাশি পরামর্শ এবং দিকনির্দেশনাও দেয়া হচ্ছে।

পদ্মা নদীর চরে আবুল কাশেম জার্মানের চাষকৃত সূর্যমুখী ক্ষেতে সারি সারি গাছে ফুটে আছে শত শত হলুদ সূর্যমুখী ফুল। সূর্যমুখী ফুলের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ও টিকটক ক্রিয়েটরদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর, স্থানীয় দর্শনার্থী ও সৌন্দর্য পিপাসু মানুষ দলবেঁধে স্বপরিবারে, ছেলে-মেয়ে, আত্নী-স্বজনও বন্ধুবান্ধব নিয়ে আসছেন সূর্যমুখী ফুলের সৌন্দর্য দেখতে। কেউ কেউ সূর্যমুখী ফুল ঘুরে দেখছে, কেউবা আবার ফুলের সাথে সেলফি তুলছে, আবার কেউবা ভিডিও করছে।
সূর্যমুখী ফুলবাগান দেখতে আসা নজরুল, হৃদয় হাসান, জোসনা ও শেফালী জানান, সূর্যমুখী ফুলের অপূর্ব সৌন্দর্য মানুষের মন কেড়ে নেয়। বাড়ির পাশেই এরকম ফুল ফোটার খবর পেয়ে আমরা দেখতে এসেছি।
উপজেলার সাঁড়া ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের কৃষক আবুল কাশেম জার্মান আলী জানান, একদিকে যেমন ফুলের সৌন্দর্য মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অন্যদিকে আবাদে খরচও কম হওয়ায় এ ফুলের বীজ বেঁচেও লাভবান হওয়া যায়। তিনি ৩৩ শতক জমিতে বারি – ৩ জাতের সূর্যমুখী আবাদ করছি। এতে তার খরচ হয়েছে সাত হাজার টাকা। শেষ পর্যন্ত যদি কোনো আপদ না এলে বা আবহাওয়া অনুকূলে থাকে ওই জমিতে আট থেকে নয় মণ ফলনের আশা করছেন তিনি। তিনি জানান, সূর্যমুখী বাজার মূল্য মণপ্রতি ৩ হাজার টাকা থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা। সূর্যমুখী বীজের কাঙ্খিত দাম পেলে ধান চাষের চেয়ে অন্তত তিন গুন বেশি লাভবান হব বলে মনে করি।
উপজেলার আড়মবাড়িয়া ব্লকের উপ -সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল আলিম জানান, নদী বিধৌত দো-আঁশ, বেলে দো-আঁশ এবং এটেল দো-আঁশ মাটি সূর্যমুখি চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। পোকামাকড় ও রোগবালাই আক্রমন হলে সাথে সাথেই আমরা পরামর্শ দিচ্চি। আশা করা যাচ্ছে, আগামীতে পরিবেশ ও আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সূর্যমুখী ফুলের চাষ বৃদ্ধি পাবে।
ঈশ্বরদী উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার প্রহল্লাদ কুমার কুন্ডু বলেন, ঈশ্বরদী উপজেলায় সূর্যমুখী ফুল চাষের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ বছর ঈশ্বরদী উপজেলাতে ৩ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে। সূর্যমুখীর বীজ থেকে উৎপাদিত তেল সোয়াবিনের বিকল্প হিসেবে রান্নার কাজে ব্যবহার করা যায়। সূর্যমুখীর তেল স্বাস্থ্যসম্মত, এন্টি অক্সিডেন্ট যুক্ত। ১০ কেজি সূর্যমুখীর বীজ থেকে প্রায় সাড়ে ৪ কেজি তেল উৎপাদন হয়। সূর্যমুখী চাষকৃত জমির উর্বরতার বৃদ্ধি করে। এতে পোকামাকড় আক্রমণ কম করে। সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে কৃষকের কৃষি প্রণোদনা স্বরূপ বীজ, সারসহ বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সূর্যমুখী ফুলের বীজ বিক্রির জন্যও কৃষকদেরকে আমরা প্রয়োজনীয় সহায়তা করব।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ সার ব্যবসায়ীকে ১ মাসের কারাদণ্ড ও জরিমানা

কম খরচে লাভ বেশি,

সূর্যমুখী চাষে কৃষকের সাফল্য দেখতে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়

Update Time : ০১:১৫:০৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫

হলুদ রঙের ফুলে মৌমাছির গুঞ্জন আর মন মাতানো ঘ্রাণ মুখরিত হয়ে উঠেছে পদ্মা নদীর চরে আবাদকৃত সূর্যমুখী ফুলের জমিতে। উঁচু করে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে সারি সারি সূর্যমুখী ফুল। বাতাসে দুলতে থাকা ফুলগুলো যেন আমন্ত্রণ জানাচ্ছে সৌন্দর্য উপভোগ করতে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় বাংলাদেশের চর এলাকায় আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের মাধ্যমে সূর্যমুখীর চাষবাদ হচ্ছে। প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় কৃষকদের প্রয়োজনীয় বীজ,সার ও কীটনাশক দেয়ার পাশাপাশি পরামর্শ এবং দিকনির্দেশনাও দেয়া হচ্ছে।

পদ্মা নদীর চরে আবুল কাশেম জার্মানের চাষকৃত সূর্যমুখী ক্ষেতে সারি সারি গাছে ফুটে আছে শত শত হলুদ সূর্যমুখী ফুল। সূর্যমুখী ফুলের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ও টিকটক ক্রিয়েটরদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর, স্থানীয় দর্শনার্থী ও সৌন্দর্য পিপাসু মানুষ দলবেঁধে স্বপরিবারে, ছেলে-মেয়ে, আত্নী-স্বজনও বন্ধুবান্ধব নিয়ে আসছেন সূর্যমুখী ফুলের সৌন্দর্য দেখতে। কেউ কেউ সূর্যমুখী ফুল ঘুরে দেখছে, কেউবা আবার ফুলের সাথে সেলফি তুলছে, আবার কেউবা ভিডিও করছে।
সূর্যমুখী ফুলবাগান দেখতে আসা নজরুল, হৃদয় হাসান, জোসনা ও শেফালী জানান, সূর্যমুখী ফুলের অপূর্ব সৌন্দর্য মানুষের মন কেড়ে নেয়। বাড়ির পাশেই এরকম ফুল ফোটার খবর পেয়ে আমরা দেখতে এসেছি।
উপজেলার সাঁড়া ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের কৃষক আবুল কাশেম জার্মান আলী জানান, একদিকে যেমন ফুলের সৌন্দর্য মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অন্যদিকে আবাদে খরচও কম হওয়ায় এ ফুলের বীজ বেঁচেও লাভবান হওয়া যায়। তিনি ৩৩ শতক জমিতে বারি – ৩ জাতের সূর্যমুখী আবাদ করছি। এতে তার খরচ হয়েছে সাত হাজার টাকা। শেষ পর্যন্ত যদি কোনো আপদ না এলে বা আবহাওয়া অনুকূলে থাকে ওই জমিতে আট থেকে নয় মণ ফলনের আশা করছেন তিনি। তিনি জানান, সূর্যমুখী বাজার মূল্য মণপ্রতি ৩ হাজার টাকা থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা। সূর্যমুখী বীজের কাঙ্খিত দাম পেলে ধান চাষের চেয়ে অন্তত তিন গুন বেশি লাভবান হব বলে মনে করি।
উপজেলার আড়মবাড়িয়া ব্লকের উপ -সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল আলিম জানান, নদী বিধৌত দো-আঁশ, বেলে দো-আঁশ এবং এটেল দো-আঁশ মাটি সূর্যমুখি চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। পোকামাকড় ও রোগবালাই আক্রমন হলে সাথে সাথেই আমরা পরামর্শ দিচ্চি। আশা করা যাচ্ছে, আগামীতে পরিবেশ ও আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সূর্যমুখী ফুলের চাষ বৃদ্ধি পাবে।
ঈশ্বরদী উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার প্রহল্লাদ কুমার কুন্ডু বলেন, ঈশ্বরদী উপজেলায় সূর্যমুখী ফুল চাষের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ বছর ঈশ্বরদী উপজেলাতে ৩ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে। সূর্যমুখীর বীজ থেকে উৎপাদিত তেল সোয়াবিনের বিকল্প হিসেবে রান্নার কাজে ব্যবহার করা যায়। সূর্যমুখীর তেল স্বাস্থ্যসম্মত, এন্টি অক্সিডেন্ট যুক্ত। ১০ কেজি সূর্যমুখীর বীজ থেকে প্রায় সাড়ে ৪ কেজি তেল উৎপাদন হয়। সূর্যমুখী চাষকৃত জমির উর্বরতার বৃদ্ধি করে। এতে পোকামাকড় আক্রমণ কম করে। সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে কৃষকের কৃষি প্রণোদনা স্বরূপ বীজ, সারসহ বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সূর্যমুখী ফুলের বীজ বিক্রির জন্যও কৃষকদেরকে আমরা প্রয়োজনীয় সহায়তা করব।