ঢাকা ০৫:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ সার ব্যবসায়ীকে ১ মাসের কারাদণ্ড ও জরিমানা Logo মহাদেবপুরে আদালতের আদেশ অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা Logo দুর্গাপুরে ‎রাজশাহী-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন  Logo শীতের গন্ধ, তাপমাত্রা কমছে প্রতিদিন দুই ডিগ্রি ঈশ্বরদীতে দোকানে উঠছে শীতের সোয়েটার-জ্যাকেট, কম্বল Logo পদ্মার চরজুড়ে চলছে ‘অপারেশন ফার্স্ট লাইট’ Logo নীলফামারীতে চার দফা দাবী বাস্তবায়নে বিসিএস প্রভাষক পরিষদের মানবন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন Logo বিএনপি অফিস ভাংচুর মামলায়  ছাত্রলীগ নেতা আটক   Logo দেশের চলমান সব সংকট নাটকের অংশ, মানুষ ভোট দিতে চায়: মির্জা ফখরুল Logo ধেয়ে আসছে মৌসুমের প্রথম কুয়াশা বেল্ট Logo ১৩ নভেম্বর রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইসির সংলাপ শুরু

মার্কিন সহায়তা হ্রাস: মিয়ানমার নিয়ে জাতিসংঘ দূতের হুঁশিয়ারি

মার্কিন মানবিক সহায়তা হ্রাসের সম্ভাব্য পরিণতি নিয়ে সুইজারল্যান্ডে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছেন মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুজ।
সোমবার জেনেভায় এই সংবাদ সম্মেলনে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, মার্কিন সহায়তা কমলে মিয়ানমারের জনগণের উপর তার ভয়াবহ প্রভাব পড়বে এবং এর ফলে সহিংসতা আরো বাড়তে পারে।

অ্যান্ড্রুজ বলেন, খাদ্য ও স্বাস্থ্য কর্মসূচিতে হঠাৎ করে কাটছাঁট এরইমধ্যে গুরুতর মানবিক পরিস্থিতিকে আরো খারাপ করে তুলেছে। ২০২১ সালে ক্ষমতা দখলকারী সামরিক জান্তার বিমান হামলা এবং সহিংসতাও আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।

জাতিসংঘ-সমর্থিত মানবাধিকার কাউন্সিল কর্তৃক মিয়ানমারের বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক জানিয়েছেন, তিনি কমিশনের ৪৭টি সদস্য রাষ্ট্রের কাছে উদ্ভূত বিপর্যয়কে একটি মানবিক সংকট হিসাবে ঘোষণা জারির আবেদন জানাবেন। রাষ্ট্রগুলো যাতে নিজেদেন প্রতিশ্রুতি কার্যকরভাবে অনুসরণ করে সেজন্যও অনুরোধ করবেন তিনি।

বুধবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে এই ইস্যুতে ভাষণ দিবেন অ্যান্ড্রুজ। এর আগে সোমবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “অত্যাবশ্যক, জীবনরক্ষাকারী কর্মসূচির তহবিল সংগ্রহের জন্য পদক্ষেপ (নেয়া প্রয়োজন)। মানবাধিকার কাউন্সিল যদি (পদক্ষেপ) না নেয়, তাহলে কে নেবে?”

২০ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ৯০ দিনের জন্য সকল বিদেশি সহায়তা স্থগিত করার নির্দেশ দেন। এই সময়ের মধ্যে এসব সহায়তা কর্মসূচি ট্রাম্পের ‘অ্যামেরিকা ফার্স্ট পররাষ্ট্র নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ কিনা’ তা পর্যালোচনা করা হবে।

অ্যান্ড্রুজ সতর্ক করে দিয়েছেন, সম্প্রতি বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচিতে মার্কিন সহায়তা হ্রাসের ঘোষণার ফলে মিয়ানমারের পশ্চিমে রাখাইন রাজ্যে দুর্ভিক্ষ আসন্ন।

মিয়ানমারের মানুষের চিকিৎসা সেবাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মূলত, মার্কিন অর্থায়নে পরিচালিত স্বাস্থ্য কর্মসূচি ব্যাহত হওয়ায় কিছু এইচআইভি রোগী গত সাত সপ্তাহ ধরে ওষুধ পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন অ্যান্ড্রুজ।

জাতিসংঘের নতুন প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেছেন, “এটি একটি বিপর্যয় যা ঘটছে – এটি অপ্রয়োজনীয় এবং এটি নিষ্ঠুর।”

অ্যান্ড্রুজের আশঙ্কা, পরিস্থিতি আরো অস্থিতিশীল হলে মিয়ানমারে যৌন হয়রানি, মানব পাচার এবং সীমান্ত অতিক্রম করে প্রতিবেশী বাংলাদেশ বা তার বাইরেও মানুষের ঢল বাড়তে পারে।

ট্রাম্প প্রশাসন এবং তার অনেক সমর্থক যুক্তি দেখিয়েছেন যে বিশ্বের একক বৃহত্তম মানবিক সহায়তা প্রদানকারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত বোঝা বহন করে আসছে।

তবে এর ফলে যে পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, তা আশঙ্কাজনক উল্লেখ করে জাতিসংঘের বিশেষ দূত বলেন, “আমাদের এই বিষয়ে একটি অবস্থান নেওয়া দরকার।”

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ সার ব্যবসায়ীকে ১ মাসের কারাদণ্ড ও জরিমানা

মার্কিন সহায়তা হ্রাস: মিয়ানমার নিয়ে জাতিসংঘ দূতের হুঁশিয়ারি

Update Time : ০৮:৫২:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫

মার্কিন মানবিক সহায়তা হ্রাসের সম্ভাব্য পরিণতি নিয়ে সুইজারল্যান্ডে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছেন মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুজ।
সোমবার জেনেভায় এই সংবাদ সম্মেলনে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, মার্কিন সহায়তা কমলে মিয়ানমারের জনগণের উপর তার ভয়াবহ প্রভাব পড়বে এবং এর ফলে সহিংসতা আরো বাড়তে পারে।

অ্যান্ড্রুজ বলেন, খাদ্য ও স্বাস্থ্য কর্মসূচিতে হঠাৎ করে কাটছাঁট এরইমধ্যে গুরুতর মানবিক পরিস্থিতিকে আরো খারাপ করে তুলেছে। ২০২১ সালে ক্ষমতা দখলকারী সামরিক জান্তার বিমান হামলা এবং সহিংসতাও আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।

জাতিসংঘ-সমর্থিত মানবাধিকার কাউন্সিল কর্তৃক মিয়ানমারের বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক জানিয়েছেন, তিনি কমিশনের ৪৭টি সদস্য রাষ্ট্রের কাছে উদ্ভূত বিপর্যয়কে একটি মানবিক সংকট হিসাবে ঘোষণা জারির আবেদন জানাবেন। রাষ্ট্রগুলো যাতে নিজেদেন প্রতিশ্রুতি কার্যকরভাবে অনুসরণ করে সেজন্যও অনুরোধ করবেন তিনি।

বুধবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে এই ইস্যুতে ভাষণ দিবেন অ্যান্ড্রুজ। এর আগে সোমবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “অত্যাবশ্যক, জীবনরক্ষাকারী কর্মসূচির তহবিল সংগ্রহের জন্য পদক্ষেপ (নেয়া প্রয়োজন)। মানবাধিকার কাউন্সিল যদি (পদক্ষেপ) না নেয়, তাহলে কে নেবে?”

২০ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ৯০ দিনের জন্য সকল বিদেশি সহায়তা স্থগিত করার নির্দেশ দেন। এই সময়ের মধ্যে এসব সহায়তা কর্মসূচি ট্রাম্পের ‘অ্যামেরিকা ফার্স্ট পররাষ্ট্র নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ কিনা’ তা পর্যালোচনা করা হবে।

অ্যান্ড্রুজ সতর্ক করে দিয়েছেন, সম্প্রতি বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচিতে মার্কিন সহায়তা হ্রাসের ঘোষণার ফলে মিয়ানমারের পশ্চিমে রাখাইন রাজ্যে দুর্ভিক্ষ আসন্ন।

মিয়ানমারের মানুষের চিকিৎসা সেবাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মূলত, মার্কিন অর্থায়নে পরিচালিত স্বাস্থ্য কর্মসূচি ব্যাহত হওয়ায় কিছু এইচআইভি রোগী গত সাত সপ্তাহ ধরে ওষুধ পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন অ্যান্ড্রুজ।

জাতিসংঘের নতুন প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেছেন, “এটি একটি বিপর্যয় যা ঘটছে – এটি অপ্রয়োজনীয় এবং এটি নিষ্ঠুর।”

অ্যান্ড্রুজের আশঙ্কা, পরিস্থিতি আরো অস্থিতিশীল হলে মিয়ানমারে যৌন হয়রানি, মানব পাচার এবং সীমান্ত অতিক্রম করে প্রতিবেশী বাংলাদেশ বা তার বাইরেও মানুষের ঢল বাড়তে পারে।

ট্রাম্প প্রশাসন এবং তার অনেক সমর্থক যুক্তি দেখিয়েছেন যে বিশ্বের একক বৃহত্তম মানবিক সহায়তা প্রদানকারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত বোঝা বহন করে আসছে।

তবে এর ফলে যে পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, তা আশঙ্কাজনক উল্লেখ করে জাতিসংঘের বিশেষ দূত বলেন, “আমাদের এই বিষয়ে একটি অবস্থান নেওয়া দরকার।”